ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১

বাঁধ কেটে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার মাটি বানিজ্য

দৈনিক নতুন সংবাদ | নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া জানুয়ারি ১১, ২০২৩, ১০:০২ পিএম বাঁধ কেটে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার মাটি বানিজ্য

বগুড়ার ধুনটে অবৈধভাবে পেঁচিবাড়ি-ফড়িংহাটা সরকারি খালে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধ কেটে মাটি বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জাকারিয়া হাবিব ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ওই বাঁধ কাটার ফলে বর্ষা মৌসুমে খালের পাড় উপচে কৃষি জমিতে পানি ঢুকে ফসলের ক্ষতি হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। 
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়নে (পাউবো) পেঁচিবাড়ি থেকে ফড়িংহাটা গ্রাম পর্যন্ত ৬কিলোমিটার খাল পুনঃখনন কাজ শুরু করা হয়। ওই খাল খনন করে সেই মাটি দিয়ে খালের দুই পাশে উচু বাঁধ (পাড়) তৈরির মাধ্যমে ২০২০ সালে কাজ শেষ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এই খালের পানি দিয়ে স্থানীয় কৃষকরা আবাদি জমিতে সেচের চাহিদা পুরণ করে থাকেন। 
বুধবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরের পর সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সভাপতি জাকারিয়া হাবিব ও তার সহযোগীরা ৪ দিন ধরে ওই খালের বিশহরিগাছা অংশ থেকে খনন যন্ত্র দিয়ে বাঁধের মাটি কেটে স্থানীয় ইটভাটায় বিক্রি করছেন। মাটি কাটার ফলে উচু বাঁধ সমতল ভূমিতে পরিণত হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে খালের পানি উপচে আবদি জমিসহ লোকালয়ে পানি প্রবেশ করবে। এতে স্থানীদের ব্যাপক ক্ষতি হবে। 
স্থানীয়রা জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্চয় কুমার মহন্ত চিকিৎসা গ্রহণের জন্য ভারতে অবস্থান করছেন। এছাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুরুল আমিন ৬ মাসের প্রশিক্ষণে উপজেলার বাইরে আছেন। এ সুযোগে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা জাকারিয়া হাবিব অবৈধভাবে বাঁধ কেটে মাটি বিক্রি করছেন। 
এলাকার কয়েকজন কৃষক জানান, খাল পুনঃখনন করায় তারা ফসলি জমিতে সেচ সুবিধা পেয়েছেন। কিন্ত বাঁধ কেটে মাটি বিক্রি করায় জমির সঙ্গে পাড় সমান হয়ে যাচ্ছে। এতে খালের পানি পাড় উপচে জমির ভেতর প্রবেশ করে ফসলের ক্ষতি হবে। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করে কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। 
এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা জাকারিয়া হাবিব বলেন, আমার নাম ভেঙে কে বা কারা খালের বাঁধ কেটে মাটি বিক্রি করছে তা জানা নেই। তবে ওই বাঁধ কেটে মাটি বিক্রয়ের সঙ্গে আমি জড়িত না। তারপরও আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। 
খাল থেকে বাঁধের মাটি ক্রেতা এমভিসি ব্রিক্সের (ইটভাটা) ব্যবস্থাপক নাঈম বাবু বলেন, জাকারিয়া হাবিব নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে বাঁধের মাটি কিনে নিয়ে ভাটায় ইট তৈরির কাজে ব্যবহার করছি। 
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সহকারী প্রকৌশলী আসাদুল হক বলেন, খালের পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার কথা শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  ###
 

Side banner