ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে ফেঁসে গেলেন দুই বন্ধু

দৈনিক নতুন সংবাদ | নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া জানুয়ারি ১৩, ২০২৩, ০৭:৩৪ পিএম টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে ফেঁসে গেলেন দুই বন্ধু

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় দুই বন্ধু টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে ফেঁসে গেছেন। পরে পুলিশের কৌসুলি তদন্ত ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দুই বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ। অতিরিক্ত লোভ কারণেই তাদের এমনটা হয়েছে বলে জানান পুলিশ। 
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন এসব তথ্য জানান। তাদের বিরুদ্ধে শুক্রবার থানায় মামলা দায়ের করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার ষাঁড়বুরুজ গ্রামের ধান ব্যবসায়ী মিনার আলী।
আটককৃতরা হলো- উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের বিলশা গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে জিয়াউল হক জিয়া (৩৩) ও বেলঘড়িয়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল রানা (৩০)। গত বৃহস্পতিবার তাদেরকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে এইসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশ জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ধান ব্যবসায়ী মিনার আলীর সঙ্গে নন্দীগ্রামের জিয়াউল হক ও তার বন্ধু সোহেল রানার দীর্ঘদিনের ধান ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা সংক্রান্তে সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ উপজেলা থেকে ধান ক্রয় করে তারা বিভিন্ন কোম্পানীতে সরবরাহ করতো। ব্যবসার লেনদেনের টাকা সোহেল রানার ইসলামী ব্যাংক নন্দীগ্রাম শাখার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হতো। এনিয়ে দুই বন্ধু জিয়াউল হক ও সোহেল রানার মাথায় বৃদ্ধি আসে টাকা আত্মসাৎ করার। একপর্যায়ে গত বুধবার ধান ব্যবসায়ী মিনার আলীর কথামতো এরোমেটিক এগ্রো এন্ড ফুড লিমিটেডের মালিক ২১ লাখ টাকা পাঠিয়ে দেন সোহেলের অ্যাকাউন্টে।
এদিকে মিনারের কথামতো ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা দুটি অ্যাকাউন্টে পাঠায় সোহেল। ধান ক্রয়ের জন্য বাঁকি ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিয়ে যায় জিয়াউল হক ও তার বন্ধু সোহেল রানা। ওই দিন সন্ধ্যায় মিনারকে ফোন করে সোহেল জানায়, ব্যাংক থেকে ফেরার পথে টাকাগুলো ছিনতাই হয়ে গেছে। 
ভাটরা ইউনিয়নের মকবুল মেম্বার থানায় ফোন করে জানায়, উপজেলার সিমলা বাজার থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে ঢাকারগাড়ি ব্রীজ এলাকায় তার ছেলের ব্যবসায়ী পার্টনার জিয়াউল হক ডাকাতির কবলে পড়েছে এবং টাকাগুলো নিয়ে গেছে।
ওসি আনোয়ার আরও জানান, সংবাদ পেয়ে পুলিশের চৌকস টিম তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি সাজানো নাটক হিসেবে সন্দেহ করে পুলিশ। টাকা ছিনতাই অভিযোগ নিয়ে বুধবার রাতেই থানায় আসে বেলঘড়িয়া গ্রামের জিয়াউল হক ও সোহেল। অভিযোগে লিখেছিলো, ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে জিয়াউল হক জিয়া মোটরসাইকেল যোগে ফেরার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তার পথরোধ করে টাকার ব্যাগ ছিনতাই হয়। তবে জিয়া ও সোহেল ভেবেছিলো, থানায় অভিযোগ করলেই পুলিশ তাদেরকে সন্দেহ করবে না। পৌরসভার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে টাকা ছিনতাই নাটকের রহস্য উন্মোচন হয় এবং তাদের কে আটক করে পুলিশ। 
অবশেষে নিজেদের সাজানো নাটকে নিজেরাই ফেঁসে গেল দুই বন্ধু। তাদের দুইজনের তথ্যের ভিত্তিতে পৌরসভার ওমরপুর এলাকার জনৈক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। বাঁকি এক লাখ টাকা উদ্ধার করা যায়নি। ###

Side banner