কোলেস্টেরল বাড়লে হার্টে, পায়ে এবং চোখে সমস্যা হতে পারে। তাই খারাপ এলডিএল কমাতে হবে। এবার চিকিৎসক এমনই কিছু সহজ টিপস জানালেন যার মাধ্যমে নতুন বছরে কমবে হাই কোলেস্টেরল।
কোলেস্টেরল একটি ভয়াবহ অসুখ। এই রোগ বহু অযাচিত সমস্যা ডেকে আনে। তাই প্রতিটি মানুষকে বলা হয় যত শীঘ্র সম্ভব এই অসুখকে বাগে আনার চেষ্টা করার। এবার নতুন বছরে এই রোগ যাতে সমস্যা না তৈরি করতে পারে সেই বিষয়ে সচেষ্ট হতে হবে।
আসলে কোলেস্টেরল আমাদের মধ্যে প্রতিটি মানুষেরই রয়েছে। তবে তা স্বাভাবিক মাত্রা ছাড়ালে সমস্যা। এই অসুখে আক্রান্ত হলে শরীর গুরুতর কিছু জটিলতা দেখা যায়। হতে পারে হার্টের রোগ। এছাড়া পায়ে ও চোখে জমতে পারে এই উপাদান। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।
এবার মাথায় রাখা দরকার যে কোলেস্টেরল বাড়লে তার চিকিৎসা জরুরি। এমনকী খেতে হবে ওষুধও। তবে এর পাশাপাশি লিপিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে আপনাকে খাবারদাবার ও জীবনযাত্রায় বদল আনতে হবে। তবেই সমস্যার সমাধান আপনি করে ফেলতে পারবেন। নইলে বাড়তে থাকবে জটিলতা।
এই প্রসঙ্গে কলকাতার বিশিষ্ট মেডিসিন রোগ বিশেষজ্ঞ ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, আমাদের কোলেস্টেরল বাড়ার লক্ষণ জানতে হবে। পাশাপাশি অসুখটি ধরা পড়লে কয়েকটি নিয়ম মানা দরকার। এবার এমন কয়েকটি টিপস জানা যাক যার মাধ্যমে আগামী বছর ২০২৩ সালে কোলেস্টেরল কমানো যায়।
১. এক্সারসাইজ
ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, আপনাকে এক্সারসাইজ করতে হবে। দিনে ৩০মিনিট বা তার বেশি সময় করুন ব্যায়াম। এই সময়টুকু ব্যায়াম করে নিতে পারলেই বহু সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। আসলে এক্সারসাইজ করলে খারাপ লিপিড শরীর থেকে কমে যায়। এমনকী ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল বাড়ে। তাই প্রতিটি মানুষকে এক্সারসাইজ করতে হবে। আর কোনও একদিন নয়। প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। ভালো হয় কঠিন উপায়ে ঘাম ঝরাতে পারলে।
২. রেড মিট নয়
আপনি রেডমিট একবারেই খাবেন না। এই খাবারে রয়েছে খারাপ ফ্যাট। এই ফ্যাট শরীরে সরাসরি বাড়িয়ে দিতে পারে সমস্যা। তাই প্রতিটি মানুষকে রেডমিট খাওয়া এড়িয়ে যেতে হবে। আর মনে রাখবেন রেডমিট শুধু কোলেস্টেরল রোগীর জন্য নয়, সবার জন্যই খারাপ। এমনকী সুস্থ মানুষেরও খাওয়া উচিত নয়। এক্ষেত্রে আমাদের অতি পছন্দের পাঁঠার মাংস এই তালিকায় পড়ে। তাই মাসে এক-আধবারের বেশি খাওয়া যাবে না। এতে সমস্যা তৈরি হবে শরীরে। এবার এই বিষয়টি মাথায় রাখুন।
৩. প্যাকেটবন্দি ভাজা খাবার
ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, এই খাবার এখন মানুষ খুব খান। এই খাবারে রয়েছে অনেকটা পরিমাণে তেল। এছাড়া মাথায় রাখবেন নানা ক্ষতিকর পদার্থ থাকে। এমনকী খুব বেশি নুনও থাকে এই খাবারে। তাই আপনাকে সতর্ক হতে হবে। এবার প্যাকেটবন্দি এই খাবারগুলি আপনাকে এড়িয়ে যেতে হবে। এর তালিকায় চিপস থেকে শুরু করে চানাচুর বা এই ধরনের সব খাবারই রয়েছে। এবার মাঝেসাঝে কম পরিমাণে খেলে তেমন কম বড় সমস্যা নেই। তবে নিয়মিত মুখে তুললেই জটিলতা বাড়বে।
৪. ঘি, মাখন, মার্জারিন নয়
ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, আমাদের দেশের মানুষ ঘি খেতে পছন্দ করেন। এই খাবারে যে ভরপুর পুষ্টিগুণ রয়েছে এই নিয়ে বিবাদ নেই। তবে এই খাবার বেশি পরিমাণে খেলে আদতে সমস্যা বাড়তে থাকে। তাই ঘি নয়। এছাড়া মার্জারিন বা মাখনও খাওয়া যাবে না। আসলে এই সকল খাবারে রয়েছে স্যাচুরেটেড ফ্যাট যা আদতে বাড়াতে পারে খারাপ কোলেস্টেরল। তাই আপনি এই খাবার থেকে দূরে থাকুন লিপিডের অসুখ থাকলে। এবার সতর্ক হয়ে যান। এই বিষয়টি সম্পর্কে।
৫. ফল, শাক, সবজি
এই সময়ে দাঁড়িয়ে প্রতিটি মানুষকে খেতে হবে তাজা খাবার। এমনকী সব ধরনের প্রাকৃতিক খাবার খাওয়া দরকার। এবার সেই তালিকায় থাকবে ফল, শাক, সবজি। দেখা গিয়েছে এই খাবারগুলিতে থাকা ফাইবার শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল বের করে দেয়। এছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দারুণ কাজ করে। তাই এই খাবার নিয়মিত খান।
দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ###
আপনার মতামত লিখুন :